আ হ জুবেদঃ কুয়েতে আল তয়িক কোম্পানিতে কর্মরত কয়েক’শ বাংলাদেশী শ্রমিকদের কর্মবিরতি।
দেশটির আল তয়িক ক্লিনিং কোম্পানির অপারেশন ম্যানেজারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে এবং কোম্পানির সাথে শ্রমিকদের নির্দিষ্ট কন্টাক্ট শেষে আকামা নবায়ন বাবদ অতিরিক্ত টাকা দাবি করায় শ্রমিকরা এ কর্মবিরতি পালন করছেন।
কুয়েতে আকামা সমস্যা, ভিসা জটিলতা ও কর্মহীন প্রবাসীদের সংখ্যা গত তিন বছরে বহু গুণে বেড়ে গেছে।
তবে এসব সমস্যা সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে প্রায় এক দশক আগে স্বাভাবিক নিয়মে ভিসা পাওয়ার সুযোগটি বন্ধ হওয়ার পর থেকেই।
কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস দেশটিতে বসবাসরত নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রবাসীদের ভিসা জটিলতা দূর করে, বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ করে দিতে স্থানীয় আইন ও নিয়মানুসারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত কয়েক দিন আগে দূতাবাসের কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের স্বাক্ষরকৃত এক বিজ্ঞপ্তিতে ও প্রবাসী সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা জানিয়েছেন কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম।
এদিকে গত ২৬শে নভেম্বর আল-তয়িক নামে একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে কর্মরত কয়েক’শ বাংলাদেশী শ্রমিকরা তাদের আকামা নবায়ন বাবদ অতিরিক্ত টাকা দাবির অভিযোগ করেছেন উক্ত কোম্পানিতে কর্মরত অপারেশন ম্যানেজার মোজাম্মেল হুসেন তারেক নামে এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, কোম্পানি কর্তৃক ধার্য করা আকামা নবায়ন বাবদ ৩৫০ (কুয়েতি দিনার) হলেও তারেক সবসময়’ই শ্রমিকদের কাছ থেকে কুয়েতি ১০০০ (কুয়েতি দিনার) দাবি করতেন।
এ ব্যাপারে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, রাষ্ট্রদূত- আল-তয়িক কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পত্র প্রাপ্তির কথা জানান।
রাষ্ট্রদূত, শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আল-তয়িক কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের কারণে ২০১৭ ও ২০১৯ সালে লিখিত অভিযোগ বাংলাদেশে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত, কোম্পানির মালিক পক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের কথাও জানান।
পাশাপাশি শ্রমিকদের আকামা-ভিসা জটিলতা সৃষ্টিকারী কতিপয় বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টিও এসময় উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশী শ্রমিকদের কর্মবিরতির ভিডিও ফুটেজ ও অন্যান্য ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম বলেন, আকামা জটিলতা দূর করে বাংলাদেশী শ্রমিকদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
গত ২৭শে নভেম্বর কুয়েত দূতাবাসের কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরকৃত এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কতিপয় লোক আল-তয়িক কোম্পানির শ্রমিকদের প্রকৃত সমস্যা না জেনে ফেসবুকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত , বিভ্রান্তিকর ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৬শে নভেম্বর আল-তয়িক কোম্পানির শতাধিক বাংলাদেশী শ্রমিকরা কুয়েত বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে উক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে তাদের একটি লিখিত অভিযোগ রাষ্ট্রদূত বরাবরে দাখিল করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ২৬শে নভেম্বর কুয়েতের হাসাবিয়া এলাকায় আল-তয়িক কোম্পানির ব্যারাকে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও উক্ত কোম্পানির মালিকের উপস্থিতিতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে দূতাবাসের গৃহিত পদক্ষেপ অবহিত করা হয়।